নূরত মকবুলের 'উইথ লাভ ফ্রম কাশ্মীর' এর বাংলা অনুবাদ, কলকাতা বইমেলায়।

প্রকাশিত হচ্ছে নূরত মকবুলের "উইথ লাভ ফ্রম কাশ্মীর" এর বাংলা অনুবাদ। ভালোবাসা কাশ্মীর থেকে। মূলত তিনটি লেখা নিয়ে এই বই। প্রথমে, ন'বছর বয়সী একটি কাশ্মীরি মেয়ের গোটা বিশ্বের কাছে চিঠি যেটি কাশ্মীরি লেখিকা নূরত মকবুলের 'উইথ লাভ ফ্রম কাশ্মীর' এর বাংলা অনুবাদ, দ্বিতীয় লেখাটি নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাশ্মীরি ছাত্রের ৩৭০, ৩৫এ ধারা বাতিলের পরবর্তী সময়ের বিবৃতি এবং তৃতীয় ও সর্বশেষ লেখাটি এই ধারা বাতিলের পর উপত্যকার মানুষের অবস্থা, বেঁচে থাকা, সামগ্ৰিক পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যসন্ধানী রিপোর্ট। প্রথম দুটির অনুবাদ এবং শেষের রিপোর্টটি কাশ্মীর থেকে ফিরে লিখেছেন সঞ্চিতা আলী।

প্রকাশকের কথা

আমরা জানি ভারতে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় সংবিধানের "৩৭০ এবং ৩৫এ" ধারা বাতিলের যে সিদ্ধান্ত এবং জম্মু - কাশ্মীরকে বিভক্ত করবার যে নীতি নিয়েছে তাতে কাশ্মীরি জনসাধারণের জীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোরিয়ার বর্ডার অঞ্চলের থেকেও বেশি সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে কাশ্মীরে, যা প্রায় সমগ্র ভারতীয় সেনাবাহিনীর অর্ধেকটাই। কার্যত কাশ্মীর, 'ভারতের ভূস্বর্গ' একটা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ বাতিল করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন, কারফিউ জারি, ইন্টারনেট বন্ধ এবং সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে, যা অগণতান্ত্রিক তো বটেই তাছাড়াও কাশ্মীরি জনসাধারণের সিদ্ধান্ত না নিয়ে এরকম একটি নীতির বাস্তবায়ন সমগ্র জনজাতির মর্যাদাহানির সমান। শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১৩০০০ এর অধিক মানুষকে বন্দী করা হয়েছে এবং স্থানাভাবের কারণে তাদের বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কারোর বাবা, কারোর ভাই, কারোর স্ত্রী নিখোঁজ হয়েছেন, সরকারের কাছে কোনো সদর্থক উত্তর নেই। স্বাধীনতার আগে থেকেই কাশ্মীরি জনগণ তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দাবি করে আসছে এবং এই ন্যায্য দাবির বিনিময়ে তারা যা পেয়েছে তা হল যৌন হেনস্থা, AFSPA, PSA -র মতো দমনপীড়নমূলক আইন, ছররা বন্দুকের ক্ষমাহীন আক্রমণ। প্রত্যেকটি মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমাদের এই ছোটো পুস্তিকায় বিশেষত ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ বাতিলকে কেন্দ্র করে সেখানকার জনজীবনের যে করুণ পরিস্থিতি তার একটা আংশিক রূপরেখা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আইনি পরিভাষায় 'enforced disappearance' (বলপূর্বক নিখোঁজ) বলতে আমরা যা বুঝি অর্থাৎ আপনার কোনো পরিচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্র কোনো কারণ ছাড়াই আটক করলো এবং নিখোঁজ করে দিল, এই প্রকার ঘৃণ্য, বর্বর প্রথার সাক্ষী একটি নয় বছরের মেয়ের জবানবন্দি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই পুস্তিকায়। যে দেশ এই নিপীড়িত জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়না, সেই দেশ (রাষ্ট্র বলাই ভালো) কতটা স্বাধীন সেটা সত্যিই প্রশ্নের বিষয়। আজ আমরা এই বই প্রকাশের উদ্যোগ নিচ্ছি সেইসকল কাশ্মীরি জনগণের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে যারা তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন এই রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতে। 'Peoples' Cine Indie' -র পক্ষ থেকে সকল মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রপ্রেমী পাঠকের কাছে আবেদন রইল যে এই বইটি যারা সংগ্রহ করবেন তারা অবশ্যই তাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে এই উদ্যোগের পাশে থাকবেন।

প্রকাশক: পিপলস সিনে ইন্ডি।

দাম: ২০টাকা।

প্ৰচ্ছদ: রিফাত

ভেতরের আঁকা: শান্তুনু দে, অঙ্কিতা আলী

কলকাতা বইমেলায় সোমবার (3তারিখ) থেকে পাওয়া যাবে বইটি এপিডিআর 330 নং স্টলে। এছাড়াও আরো একাধিক স্টলে রাখার ব্যবস্থা চলছে। বইমেলার পর বইটি পাওয়া যাবে কলেজস্ট্রিট ধ্যানবিন্দু ও কফিহাউস বইচিত্রে।