সুন্দরবনের প্রান্তিক গ্রামবাসীদের পাশে থাকার আবেদন
- People's News Indie
- Apr 19, 2020
- 2 min read
Updated: Apr 19, 2020

লকডাউন কাটুক আর না কাটুক উচ্চবিত্তদের কিন্তু সঞ্চিত পুঁজি ধীরে ধীরে কমছে। মধ্যবিত্ত মানুষ দিনে চারবেলা সাবান দিয়ে হাত ধুতে ব্যস্ত।নিম্নবিত্ত মানুষ প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে রেশন দোকানে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে। আর এদের তলায় একেবারে প্রান্তিক মানুষ, ভূমিহীন ক্ষেতমজুর, যেদিন কাজ পায় সেদিন হাঁড়ি চড়ে উনুনে। এই সকল মানুষ অভাবের তাড়নায় দু'বেলা গামলা নিয়ে এ বাড়ী ও বাড়ী ধার করে তুলে দিচ্ছে, এই সকল হতদরিদ্র পরিবারের শিশুর মুখে একটুখানি ভাত। এই পরিবারগুলির এমন সংকটময় পরিস্থিতি শুধু আজকের নয়, তাঁদের দাদা ঠাকুরদার আমল থেকে আজও পর্যন্ত চলে আসছে। এদের গরীবি ঘোচাতে হাড়মাস এক করে ফেলছে বাবা মায়েরা। প্রশ্ন করতে পারেন, এদেশের রেশন দোকান আছে মানে বিনামূল্যে অথবা দু'টাকা দরে চাল পাচ্ছে, কথাটা শুনতে বেশ লাগে, কিন্তু পরিবারে আর্থসামাজিক সূচক অনুযায়ী রেশন কার্ড করতে গেলে রাজনৈতিক নেতাদের যে পরিমাণ তেল সরবরাহ করতে হবে, তাতে নিজের কুটিরে রাতের বাতিটুকু যে আলো দিচ্ছিলো তা পুনরায় আবার কুটিরে অন্ধকার নামিয়ে আনবে নিশ্চিত। ভারত প্রায় ৭৩ বছর স্বাধীন হয়েছে, এই মানুষগুলোর জীবনে স্বাধীনতা দিবস আসবে কবে? এই মানুষগুলোর ভালো দিন না হয় থাক, একবেলা পেটপুরে খেতে পাবে কবে? এই যে প্রবাদ আছে না! "মরার উপর খাঁড়ার ঘা" এই লকডাউন হল এক খাঁড়া, এতদিন মানুষগুলো কোনো রকম মরে বেঁচে ছিল, এখন সম্পূর্ণ মরে যাওয়ার তাল। না আছে ভালো সরকারী বন্টনব্যবস্থা, আর না আছে দলীয় নেতাদের ন্যূনতম বিবেচনাবোধ আর একটু খানি মানবতা। এই নেতাদের কাণ্ডকারখানা দেখলেই বুঝবেন এরা শালা কী জিনিস। এইতো কয়েক মাস আগে, সুন্দরবন এলাকার উপর দিয়ে ভয়ানক বুলবুল ঝড় বয়ে গেছে। উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘরের চালে চাপানো শেষ সম্বল ত্রিপলটা।নেতারা বহুবার আশ্বাস দিয়ে গেছে একটি ত্রিপল সরকার থেকে দিয়ে যাবে, কিন্তু তা আজও আসেনি। ওরা কথা রাখেনি। কিন্তু যে মানুষটার ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে সে কথা রাখবে। কারন ওমুক বাবু তার দলকে ভোট দিতে বলে যাবেন, আর তিনি ভোটটি দিয়ে আসবেন। এই দলবাজ ভোটবাজ লোকগুলো কতটা পিশাচ, গরিবের সঙ্কটকে পুঁজি করে নেতারা বানিয়েছে নিজের বাড়ির দালান। আর যাঁর ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েছে সে রয়েছে ভাঙা ঘরে। আমাদের প্রত্যন্ত জলাকীর্ণ ব-দ্বীপ নদী দিয়ে ঘেরা সুন্দরবনের অঞ্চলগুলোর ভগ্নপ্রায় নদীবাঁধ, যেকোন সময় প্লাবিত হতে পারে। ভগ্নপ্রায় বাড়ীগুলো আজও অপেক্ষায় আছে, তাদের দিকে কেউ তো তাকাবে? শুধু অপেক্ষাই সার, কেউ এলো না, কেউ দেখলো না। এই অঞ্চলের মানুষের উপর লকডাউন আরও কঠিন দিন নামিয়ে এনেছে। না পারছে কাজে যেতে। না পারছে নৌকোটা নিয়ে নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে। না পারছে বনে জঙ্গলে কাঠ মধু সংগ্রহ করতে। বাঁচার থেকে মরাই শান্তির মনে করছে এখানকার স্থানীয় গ্রামবাসী। রীতিমতো হা-হুতাশ করছে, কান্নাকাটি করছে এক মুঠো খাবারের জন্যে!! আমরা কয়েকজন স্থানীয় যুবক যুবতীরা মিলে করোনা-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছি, আমাদের পরিচিতিকে পুঁজি করে। আমাদের পরিচিত শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষের সামনে আবেদন করছি, আপনাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এ লড়াই জিততে হবে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মুখে এক মুঠো খাবার দিয়ে।
লিখেছেন: বিশ্বরূপ প্রামাণিক
যোগাযোগঃ
সঞ্জয় গায়েন 7872631784
শিবশংকর মালি 9635553854
সুপ্রীয় গায়েন 6294008376
মিঠুন পাত্র 9641340208
অনুপ প্রামাণিক 7872934321
বাপী পাত্র 6837867564
উত্তম হালদার 9088611927
বিশ্বরূপ প্রামাণিক 8276811690
Kommentarer